আজ আমি আপনাদের সাথে এমন ২টি ফেইসপ্যাক শেয়ার করব ,এই ফেইসপ্যাকটি নিয়ম মেনে নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনি আপনার ত্বক হতে সব ধরণের কালো দাগ, ব্রণ, ব্রণের দাগ ,রোদে পুড়া কালো দাগ, ব্লাক হেডস দূর করার পাশাপাশি বয়সের ছাপকেও দূর করতে পারবেন।
এর ব্যবহারে আপনার ত্বক আগের চেয়ে অনেক বেশি ইয়াং হয়ে উঠবে। পাশাপাশি এই ফেইসপ্যাকটি ত্বক থেকে কালোভাব দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতাকে বাড়িয়ে দিবে এবং ত্বককে করে তুলবে নরম ,কোমল মসৃণ ও দীপ্তময়।
এই প্যাক গুলো কফির সাহায্যে তৈরি । তাই এই ফেইসপ্যাক ব্যবহারে ত্বক প্রাকৃতিকভাবে তরুণ উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়ে ওঠবে।
ঠিক এই কারণে সকল ধরণের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পণ্যের সাথে তুলনা করলে কপির জনপ্রিয়তা ও কার্যকারিতা এ সকল পণ্যের চেয়ে এগিয়ে থাকে।
আমি ফেসপ্যাক শেয়ার করার সাথে সাথে এটাও জানিয়ে দিব সহজে কিভাবে প্যাকগুলো তৈরি করবেন ও ব্যবহার করে সুস্থ্য,উজ্জ্বল,দীপ্তময়,ফর্সা ত্বকের অধিকারী হতে পারবেন।
তাই বন্ধুরা, যদি আপনি ফর্সা উজ্জ্বল ,দাগহীন গ্লোয়িং ও ক্লিন ত্বক পেতে চান তাহলে
এই ফেইসপ্যাকটিগুলোকে একবার হলেও ব্যবহার করে দেখবেন।
বন্ধুরা চলুন তাহলে দেখে নি কিভাবে এই ফেইসপ্যাকটিকে তৈরি করবেন ।
ত্বক ফর্সা করতে কফির সেরা ২টি ফেসপ্যাকঃ
কফির টপ ৩টি ফেইসপ্যাক
১.ময়দা , দুধ , মধু ও কফির ফেসপ্যাকঃ
নিজেকে আরেকটু সুন্দরী হিসেবে দেখার সকল নারীর গোপন মনোবাসনা। এই মনোবাসনাকে পূর্ণ করতে দই ও কফির ফেইসপ্যাকটি সর্বোচ্চ ক্ষমতা রাখে।এই ফেইস্প্যাকটি ত্বক হতে বিভিন্ন ধরণের দাগ দূর করে ত্বককে ময়শ্চারাইজ করবে। প্যাকটির ব্যবহার ত্বক হতে মৃতকোষ ও কালো রং দূর করে দিয়ে ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলে আপনাকে আরো বেশী সুন্দর করে তুলবে।
প্যাকটি তৈরিতে প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
কফি পাউডার – ২ চামচ
ময়দা – ২ চামচ
কাঁচা তরল দুধ – ৫ চামচ
মধু – ১ চামচ
প্যাকটি তৈরি ও ব্যবহার পদ্ধতিঃ
১. প্রথমে একটি পরিস্কার বাটি নিন
২.সবগুলো উপাদান একটি বাটিতে নিয়ে খুব ভাল করে মিশিয়ে স্মোথ পেষ্ট তৈরি করে নিন ।
৩. স্মোথ পেষ্ট তৈরি হয়ে গেলে ব্রাশের সাহায্যে সারা মুখ লাগিয়ে নিন ।
৪.এটি মুখের মধ্যে লাগিয়ে শুকিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন ।
৫.এটি পুরুপুরি শুকিয়ে গেলে মুখ পরিস্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিন ।
৬.মুখ নিজের ব্যবহারের ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন ।
কাজ করার কারণঃ
কফিঃ
কফির কিছু উপকারিতা আপনাদের আগে শেয়ার করেছি । এ ছাড়াও কফির মধ্যে আছে কেফেইন ও খুব powerfull অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বক হতে ডেড স্কিন টিস্যু রিমুভ করে ত্বককে ফ্রেস ও ইয়াং করে তুলবে। ত্বক হতে রোদে পুড়া কালো দাগ ,তামাটে ভাব ও ত্বকের কালচে রংও ডেড স্কিন টিস্যু রিমুভ করে দিয়ে ত্বককে ভিতর থেকে ফর্সা করে তুলে। কফি ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার পর দিনের পর দিন ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।
ময়দাঃ
ময়দাতে রয়েছে Cleansing প্রোপার্টি যা ত্বক হতে বয়সের ছাপ ,বলিরেখা ও ত্বকের সমস্ত কালো রং ও কাল দাগকে দূর করে দিয়ে ত্বককে নিমিশেই ফর্সা করে তুলে
কাঁচা তরল দুধঃ
দুধের মধ্যে থাকা ল্যাকটিক এসিড ত্বক হতে মৃতকোষ সরিয়ে ত্বককে ফর্সা করে তুলে । এছাড়াও এটি ত্বক হতে কালো দাগ ,বয়সের চাপ ও ব্রণের দাগ দূর করে দিয়ে ত্বককে দাগ মুক্ত করে তুলে।
মধুঃ
মধু ত্বকে প্রাকৃতিক ময়চশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে ত্বককে নমনীয়, কোমল ও উজ্জ্বল করে তুলে ।মধুর মধ্যে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ত্বকের কালচে ভাব দূর করে ত্বককে ভিতর থেকে ফর্সা করে তুলে।
নোটঃ
১)ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করুণ।
২) সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করতে পারবেন
২. চালের গুড়া, নারকেল তৈল ও কফির ফেইসপ্যাকঃ
এই ফেসপ্যাকটির ত্বক্রত অতিরিক্ত তৈল শোষণ করে নিবে এবং এটি ত্বকের ভারসাম্য বজায় রেখে ত্বক হতে ব্রণকে দূএ করে দিয়ে ত্বককে উজ্জ্বলতা দান করবে। এছাড়াও প্যাকটিতে আছে বয়স-বিরোধী উপাদান যা ত্বক হতে বয়সের চাপ কমিয়ে ত্বককে সুস্থ্য ও তরুণ (young)করে তুলবে।
এই ফেসপ্যাকটিকে কার্যকার করতে এটি দুই ধাপে এপ্লাই করতে হবে ।
ভাগ-১ ঃ ম্যাসাজিং
প্যাকটি তৈরিতে যা যা লাগবেঃ
কফি পাউডার – ১ চামচ
চালের গুড়া -১ চামচ
অপরিশোধিত নারকেল তৈল- ১ চামচ
প্যাকটি তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতিঃ
১.একটি পরিস্কার বাটিতে কফি পাউডার, চালের গুড়া ও অপরিশোধিত নারকেল তৈল নিয়ে সবগুলো উপাদান একসাথে খুব ভাল করে মিশিয়ে নিন।
২.সবগুলো উপাদান মিশে গেলে তৈরী হয়ে যাবে স্ক্রাবার (scrubber)। স্ক্রাবার নিয়ে মুখের মধ্যে আস্তে আস্তে আলতু করে ম্যাসাজ করুন ৫ মিনিটের মত । এতে করে আপনার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে ও ত্বক সুস্থ্য হয়ে ওঠবে ।
৩.৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন ।
ভাগ-২ ঃ ফেসপ্যাক এপ্লাই
প্যাকটি তৈরিতে যা যা লাগবেঃ
কফি পাউডার -২ চামচ
মুসর ডালের পেষ্ট – ১ চামচ
দই ১ চামচ
প্যাকটি তৈরি ও ব্যবহার পদ্ধতিঃ
ধাপঃ
১.একাটি পরিস্কার বাটিতে কফি পাউডার , মুসর ডালের পেষ্ট ও দই সবগুলো উপাদান একসাথে নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন ।
২.ব্রাশ বা তুলার প্যাডের সাহায্যে প্যাকটি সারা মুখে লাগান । তবে ঠোঁটে ও চোখে লাগাবেন না। প্যাকটি লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন ।
৩.১০ মিনিট পর কুসুম গরম পানিতে পরিস্কার টাওয়াল বা সুতির কাপড় ভিজিয়ে নিন। এরপর ভিজা টাওয়াল বা সুতির কাপড় থেকে অতিরিক্ত পানি চেপে ফেলে দিয়ে প্যাকটি মুছে তুলে নিন।
কিভাবে কাজ করবেঃ
চালের গুড়াঃ
চালের গুড়ার মধ্যে Natural skin lightening property থাকায় এটি আমাদের ত্বক থেকে Fine line, wrinkles, pimples, age spot ও blemisher এর মত চিহ্নগুলো দূর করে ত্বককে এতটাই ফর্সা ও clean করে তুলবে যার ফলে আমাদের বয়স কমপক্ষে ৩-৫ বছর কম দেখাবে,
অপরিশোধিত নারকেল তৈলঃ
নারকেল তৈল ত্বকে ময়শ্চারাইজার প্রতিনিধি হিসেবে করায় এটি ত্বককে খুব ভালভাবে ময়শ্চারাইজ করে । নারকেল তৈলে আরো আছে পক্কতা বিরুধী ক্ষমতা ত্বককে বয়সের চাপ পড়া থেকে দূরে রাখে এবং ত্বক সুস্থ্য ও সুন্দর করে তুলে ।
মুসর ডালের পেষ্টঃ
মুসর ডালের পেষ্টের মধ্যে থাকা উপাদান প্রোটিন, আয়রন জিংক ভিটামিন এ,ই, সি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তৈল শোষণ করে ভিতর থেকে পরিস্কার করে ত্বককে দেয় আরো বেশি উজ্জ্বলতা।
দইঃ
দইয়ের মধ্যে থাকা ল্যাকটিক এসিড ত্বক হতে মৃত কোষ সরিয়ে ত্বককে ফর্সা করে তুলে।এছাড়াও ভিটামিন বি-৫ ত্বক হতে কালো দাগ , বয়সের চাপ ও ব্রণের দাগ দূর করে দিয়ে ত্বককে দাগমুক্ত করে তুলে।
নোটঃ
১)সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
২) তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য খুব উপকারি ।
৩) উপাদানের অনুপাত ঠিক রেখে চাইলে যে কোন উপাদান বাড়িয়ে নিতে পারেন।
বন্ধুরা আপনাদের সাথে কফির সেরা দুটি ফেসপ্যাক শেয়ার করলাম আপনারা তাকে ইনস্ট্যান্ট ফর্সা করার জন্য এই ফেসপ্যাক দুটি ব্যবহার করতে পারেন ।
তবে আপনার যদি খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পেতে চান তাহলে এই ফেইসবুক এ সপ্তাহে দুবার থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন।
বন্ধুরা এই প্যাকগুলো এতটাই ভাল লাগবে আপনা্রা এই ফেস প্যাক গুলো ব্যবহার করার পর অন্য কোন ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে চাইবেন না।
আপনারা এর কার্যকারিতা এবং উপকারিতা পাবার জন্য এই পেকগুলোকে বাড়িতে একবার হলেও ট্রাই করে দেখুন আর এর ফলাফল অবশ্যই আমার সাথে শেয়ার করবেন ।